শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০২ অপরাহ্ন

News Headline :
পাবনায় “তারুণ্যের উৎসব ২০২৫”: আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের কর্মদিবস শুরু!! গোবিন্দগঞ্জে ত্যাগী নেতাদের মাঝে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ১২০ শিক্ষার্থীদের পথচলা পুরাতন কাঠের তৈরি সাঁকো ভাঙ্গলেই সমস্যা হবে শেরপুরে নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকে দুর্বৃত্তদের আগুন লাগানোর চেষ্টা মাদক সমাজের ক্যান্সার এটা প্রতিরোধে প্রশাসনের অনিহা-শিমুল বিশ্বাস গণমাধ্যমে বিকৃত তথ্য প্রচার ইসলামপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদী ব্রিফিং কৃষি অফিসের সামনে থেকে প্রণোদনার সার-বীজ পাচার রাজনৈতিক দলের পদধারী কেউ প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো পদে থাকতে পারবে না-সারজিস আলম গাবতলীতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ এই জনপদকে যারাই পদদলিত করেছে বাঙ্গালি তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে-শিমুল বিশ্বাস

রাজশাহী মহাসড়কে দুই হাট ভোগান্তি চরমে

Reading Time: 3 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে পুঠিয়ার বানেশ্বর এবং পবার খড়খড়ি এলাকায় দুটি হাটের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বিশেষ করে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় সপ্তাহে দুই দিন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী এবং যাত্রী সাধারণকে। আর খড়খড়ি এলাকায় প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল অন্তত ১১টা পর্যন্ত লেগে থাকছে যানজট। এখানেও ভোগান্তির পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। হাট ইজারার নামে প্রতি বছর সরকারের কোষাগারে যেমন কোটি কোটি টাকা জমা হয়, তেমনি প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পকেটেও ঢুকে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু জনসাধারণের ভোগান্তি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ভোগান্তির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সরোজমিনে রাজশাহীর বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কটি এমনিতেই অনেকটা ব্যস্ততম। নাটোর পর্যন্ত দুই লেন হওয়ায় এই রাস্তাটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে মাঝে-মধ্যেই ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ২০১৯ সালে এই মহাসড়কে বাস-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে দেশের সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১৯ জন আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছিলেন কাটাখালি এলাকায়। সেখান থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত বানেশ্বর বাজার। কৃষি ফসল কেনা-বেচার জন্য উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ হাটের মধ্যে একটি হলো বানেশ্বর। এই বাজারের একেবারে মাঝখান দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক। বাজার এলাকার কিছু অংশ ফোর লেন হলেও বাঁকি অন্তত ৯০ ভাগই দুই লেন মহাসড়ক। আবার এই বাজারের অধিকাংশ কৃষিপণ্য বিক্রি হয় রাস্তার দুই ধারে। ব্যবসায়ীরা জানান, সপ্তাহের চারদিন এখন বসে হাট। শুক্র-শনি এবং সোম-মঙ্গলবার বসে কলার হাট। আর শনিবার ও মঙ্গলবার বসে মূল হাট। ফলে এই দুই দিন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীসাধারণ ও পথচারীদের। হাটের কলেজ গেট থেকে একেবারে শিবপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট লেগে থাকে সেই ভোর থেকে। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কারণ এ হাটে ভোর বেলা থেকেই শুরু হয় কেনা-বেচা। বছরের পর বছর ধরে এভাবে চলে আসছে এই হাটটি। এখন হাটে কৃষিপণ্য কেনা-বেচার পরিমাণ বেড়েছে ১০ বছর আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন। আবার ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু হাটের বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হয়নি। ফলে একেবারে মহাসড়কের ওপরেই বসে অধিকাংশ দোকান-পাট এবং চলে কৃষি পণ্য কেনা-বেচা কাজ। হাটের ভিতর দিয়ে দ্রæতগামী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার থেকে শুরু করে বিভিন্ন যানবাহন চালাতে হয় শম্বুক গতিতে। তার পরেও অধিকাংশ সময় জটের কারণে যানবাহন আটকে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাসের চালক আব্দুল হক বলেন, ‘এই রাস্তাটি এমনিতেই ব্যস্ততম রাস্তা। যানজট না থাকলে ঢাকা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ ঘন্টায় রাজশাহীতে পৌঁছানো যায়। কিন্তু যানজটের কারণে কোনো দিনই ৬ঘন্টার আগে আমরা পৌঁছাতে পারেনি। এর ওপরে সপ্তাহের দুই দিন বানেশ্বর হাটের কারণে আরও ২০-৩০ মিনিট বা ঘন্টাও পার হয়ে যায় এই হাট পার হতে। বছরের পর বছর ধরে এভাবে আমাদের মতো চালকসহ হাজার হাজার যাত্রীদের ভোগান্তির মধ্যে ফেলানো হচ্ছে। কিন্তু কেউ কোনো প্রতিকার কওে না।’ জানতে চাইলে হাটের ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দুই কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে হাটের এক বছরের জন্য লিজ নিয়েছি। কিন্তু জায়গার সঙ্কট থাকার কারণে দুই হাটের দিন ভিড় লেগেই থাকছে রাস্তার ওপরে। এতে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আমাদের কিছু করার নাই। প্রশাসন যেভাবে হাট বুঝিয়ে দিয়েছে, সেভাবেই আমরা খাজনা (টোল) আদায় করি মাত্র। হাটের উন্নয়ন করতে হলে সেটি প্রশাসন করবে।’
এদিকে পবার খড়খড়ি বাজারে ভোর ৬টায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক ঘিরেই মূলত বসে এই হাটটি। সপ্তাহের প্রতিদিনই বসে এখানে হাট। সকাল ১১টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। তবে প্রতিদিনই এখানে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সবজি বিক্রির অন্যতম এই হাটের দুই ধারে শত শত দোকান পাটের কারণে ঠিকমতো যান চলাচল করতেও পারে না।
এ হাটে সবজি কিনতে যাওয়া রাজশাহী নগরীর ব্যবসায়ী মামুন হোসেন বলেন, ‘গত প্রায় দুই বছর ধরে এখানে হাট বসার পর থেকেই আমি প্রতিদিন সবজি কিনতে আসি। সেই সবজি শহরে গিয়ে বিক্রি করি। কিন্তু খুব ঝুঁকি নিয়ে মালামাল কিনতে হয়। একেবারে রাস্তার ওপরে হাট বসার কারণে মালামাল কিনে রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে পড়তে হয় ঝুঁকিরমুখে। দুই বছরে এই হাটের রাস্তা পার হতে গিয়ে তিন চার জন মারাও গেছেন।’ জানতে চাইলে হাটের ইজারাদার পবা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা হাট লিজ নিয়ে ব্যবসা করি। টোল আদায় করা আমাদের কাজ। হাটের নিরাপত্তা দেওয়া প্রশাসনের কাজ।’
জানতে চাইলে রাজশাহী প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ‘মহাসড়কের ওপর হাট বসার কথা না। তার পরেও যদি এমনটা হয়ে থাকে, তাহলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তার ওপরে হাট বসিয়ে জান-মালের হুমকির মুখে আমরা ঠেলে দিতে পারি না।’

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com